মানুষকে আপন করে নেয়ার এবং তার সাথে ব্যবহারের কলাকৌশল ভালো ভাবে রপ্ত করতে , সু সম্পর্ক গড়ে তোলার দক্ষতা অর্জন করতে প্রথমেই  যেটা দরকার তা হলো মানূষের স্বরুপ ও প্রকৃতি সঠিক ভাবে বোঝা।

যখন আপনি মানূষের স্বরূপ প্রকৃতি ভালোভাবে বুঝতে পারবেন তখন বুঝতে পারবেন মানূষের এক একটি আচরণের পিছনে কি কি ধরণের কারণ থাকে। তখন আপনার কাছে পরিস্কার হয়ে যাবে যে বিশেষ বিশেষ পরিস্থিতিতে মানূষের আচার আচরণ কেমন তারা কেমন প্রতিকৃয়া করে থাকে শুধুমাত্র তখনই আপনি মানূষকে আপন করে নেয়ার কলা কৌশল আয়াত্ত করতে পারবেন।

মানূষের  স্বরূপ প্রকৃতি বুঝতে হলে সর্বাগ্রে প্রয়োজন মানূষের  সম্পর্কে আপনার ব্যক্তিগত মত কি এবং  মানূষ কি রকম হলে আপনি খুশি হতেন এসব মাথা থেকে হটিয়ে ফেলা এবং মানূষ আদতে যা, বা কেমন, তার লক্ষন গুলো চিনে নেওয়া।


আসুন প্রথমে জানি মানূষ আদতে কি?

মোদ্দা কথাটি হলো , প্রতিটি মানূষেরই যাবতিয় মাথা ব্যাথা তার নিজের ব্যাপার স্যাপার নিয়ে আপনার নয়।

কথাটা অন্য ভাবে বলা যায় আপনার সামনের লোক টি আপনার সম্পর্কে যতটা না জানতে আগ্রহী তার চেয়ে হাজার গুন বেশি জানতে আগ্রহী তার নিজের সম্পর্কে ।  এবং সেটা উভয় ক্ষত্রেই  স্বয়ং আপনিও দুনিয়ার যে কোন বান্দার চেয়েও আপনার নিজের সম্পর্কে বেশি জানতে আগ্রহী। মনে রাখবেন মানূষ যাই করে তার পিছনে থাকে নিজের সুবিধা ও স্বার্থের কথা । স্বার্থ সাড়া মানূষ তার এক পাও বাড়ায় না। দান ধ্যানের কথা বলছেন সেটিও করে মানূষ তার নিজের আন্ত প্রসান্তির জন্য। এখানেও দেখুন আত্ন কথাটি জডিত। এছাড়াও কিছু মানূষ আছে যারা দান করেন মানূষের  নিকট থেকে প্রশংসা ও সুনামের জন্য। তবে এটার ক্ষত্রে অনেক ব্যাতিক্রম মানূষ আছে।  এর দারা মানূষের কত খানি উপকার হবে এ কথা আসে অনেক পরে মানুষের আত্ন চিন্তা কত খানি প্রবল দেখুন।


তাই কোন মানূষকে বিচার করার সময় আগে থাকতেই তাকে স্বার্থপর বা স্বার্থ কেন্দিক ভেবে নেয়ার ক্ষেত্রে কোন সংকোচ করার কিছু নাই। পৃথিবীতে মানূষের আবির্ভাবের দিন থেকেই মানূষ এরকম ছিলো। শেষ দিন পর্যন্ত মানূষ এরকম থাকবে বলেও আসা করা যায়।

মানুষে যে মুলত স্বার্থ চালিত এই সার সত্যটিকে ভালো করে পরিপাক করতে পারলে তার ভিত্তিতে মানূষ নিয়ে কারবার করা অনেক সহজ হয়ে ওঠে। এই সত্য টির জোরে আপনি আরও সূক্ষ ভাবে  অপরকে আপন করে নিতে  পারবেন। পরবর্তিতে দেখবেন এই একটি সূত্র থেকে তার জন্য কতরকম কলা কৌশল এর উদ্ভব ঘটেছে, যা অত্যন্ত কার্যকরী।
সুতরাং মানূষ যে আপনার নয় তাদের নিজেদের স্বার্থ্ররক্ষার ব্যাপারেই প্রধানত আগ্রহী, এই সত্যটিকেই মূলমন্ত্র করে নেওয়া দরকার।

নিচে আমি কিছু টিপস দিচ্ছি যার মাধমে খুব সহজেই আপনি অন্যের আপন হতে পারবেন । কিছু সময়ের মধ্যেই অপরের নিকট নিজেকে গ্রহন যোগ্য করে তুলতে পারবে। 


অন্যের প্রশংসা করা। 

উপরেই আমি বলেছি মানূষ অধিকাংশ ক্ষেত্রেই স্বার্থ পর তাই কেও যদি প্রসংশা করে তাহলে খুব অল্পতেই সে খুশি হয়ে যায়। কারন এই স্বার্থপর পৃথিবিতে  মানূষ অন্যের প্রশংসা করতে এক প্রকার ভুলেই গেছে। তাই একটু প্রশংসা মানেই হলো প্রশান্তির ছোয়া। সুতরাং কারোর আপন হলে গেলে প্রথম হলো তার প্রশংসা করা। তার সব কাজ তার পোশাক তার মধ্যে যত টুকু সৃষ্টিশীলতা দেখবেন তা খুজে খুজে আলাদা আলাদা ভাবে প্রসংসা করা। অনেকে ভাবেন সামনে প্রশংসা করা ঠিক নয় । এতে যাকে প্রশংসা করা হয় তিনি বিব্রত বোধ করেন। এটা সব ক্ষেত্রে সঠিক নয়। সামনে প্রশংসা করলে  অনেকে বিব্রত হলেও মনে মনে তিনি ঠিকই খুশি হন। আবার অনেকে সামনে প্রশংসা করতে লজ্জা বোধ করেন। সেক্ষত্রে আপনি এমন একজনের সামনে প্রশংসা করবেন যিনি অবশ্যই যাকে প্রশংসা করছেন তাকে গিয়ে বলবেন।


প্রথম স্বাক্ষাতে কুশল বিনিময় করুন।

পৃথিবীর শুরু থেকেই প্রথাটা পৃথিবীতে প্রচলিত যে দুই জন পরিচিত মানুষ দেখা হলো আর কিছু না বলে দুই জন দুই জন কে অতিক্রম করা অভদ্রতা তাই দুই জনের দেখা হলে কিছু না কিছু বলা এটাই হলো ভদ্রতা। তাই যেটাকে আমরা বলি কুসল বিনিময়। একটু দু জন দুই জনের খোজ খবর নেয়া। মানুষের আপন হতে গেলে এই অভ্যাস টা গড়ে তুলুন। দেখা হওয়া মাত্রই আগেই হাসি মুখে তার সাথে কুশল বিনিময় করুন।


চোখে চোখ রেখে কথা বলুন।

কাওকে আপন করে নিতে অবশ্যই আপনার দিকে মনযোগ আকর্ষন করাতে হবে। তার মনোযোগ আকর্ষন করার জন্য তার চোখের দিকে চোখ রেখে কথা বলুন। তাহলে সে আপনার কথা গুলো শুনছে কিনা তা বুঝতে পারবেন। এবং তিনি বিরক্ত হচ্ছেন কিনা খুশি হচ্ছেন তাও আপনি বুঝতে পারবেন। সুতরাং চোখে চোখ রেখে কথা না বললে যাকে বলছেন তিনি ভালো শ্রতা হয়ে ওঠে না। যার ফলে ভালো সম্পর্ক ও গড়ে ওঠে না।


ভালো শ্রোতা হন।

প্রিয় মানূষ হতে হলে ভালো শ্রতা হওয়া অত্যন্ত জরুরি। আপনি যদি একজন ভালো শ্রতা হতে পারেন এবং তার কথার সাথে নিজেকে সুন্দর ভাবে জুড়ে দিতে পারেন তাহলে খুব সহজেই আপনি তার মনে স্থান নিতে পারবেন। কারন যখনই আপনি অন্যের কথা গুলো খুব মনযোগ সহকারে শুনবেন দুঃখের কথায় সমবেদনা জানাবেন এবং শুখের কথায় খুশি হবেন হাশির কথায় হাসবেন তখন আপনাকে একজন প্রিয় মানূষ ভাবতে শুরু করবে। তার অনেক হৃদয়ের কথা অকপটে বলতে থাকবে। যা একজন মানুষের আপন হওয়ার ক্ষেত্রে অত্যন্ত জরুরি।


কথার যথাযথ উত্তর দিন চটজলদি।
কেও আপনাকে প্রশ্ন করলে বা কথা বলার সময় কোন প্রশ্নের উত্তর দেরিতে দেয়ার অর্থ হলো প্রশ্ন কর্তাকে অবজ্ঞা করা যা ভালো সম্পর্কের অন্তরায়। তাই কাওকে আপন করার জন্য প্রথম দরকার তার কথার যথাযত উত্তর দেয়া খুব তাড়াতাড়ি যার ফলে প্রশ্ন কর্তা বুঝবেন যে আপনি তাকে যথেষ্ঠ মুল্যায়ন করছেন তার কথা মনযোগ দিয়ে শুনেন তাকে যথেষ্ঠ সম্মান করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *